হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় তৎকালীন সমাজের কীরূপ চিত্র পাওয়া যায় ?
হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় তৎকালীন সমাজের কীরূপ চিত্র পাওয়া যায় ?
অথবা , হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় তৎকালীন সমাজের কীরূপ প্রতিফলন ঘটেছে ?
অথবা , ইতিহাসের উপাদান হিসাবে হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার গুরুত্ব।
হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় তৎকালীন সমাজের প্রতিফলন :-
১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার পথ চলা শুরু হয়। প্রথমদিকে পত্রিকাটি ছিল সাপ্তাহিক। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায়। ইতিহাসের উপাদান হিসাবে পত্রিকাটির ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
১. ঊনবিংশ শতকে ভারতে কৃষকদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে শোচনীয়। তারা ছিল শোষিত ও নির্যাতিত। হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় কৃষকদের দুর্দশার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়।
২. কৃষকেরা শোষিত হত মূলতঃ জমিদার , মহাজনদের দ্বারা। তাদের সেই অমানবিক অত্যাচারের কথা তুলে ধরা হয় ধারাবাহিকভাবে।
৩. সেই সময়ের ইতিহাসে দাদন প্রথা ছিল কৃষকের জীবনে এক প্রকার অভিশাপ। দাদন দিয়ে নীলকর সাহেবরা কৃষকদের নীলচাষ করতে বাধ্য করত। নীলচাষ করতে গিয়ে কৃষকদের যে করুন দুর্দশা হয়েছিল তার বিস্তারিত ও ধারাবাহিক বিবরণ পাওয়া যায় হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকায়।
৪. পত্রিকাটির মাধ্যমে সাঁওতাল বিদ্রোহ সম্পর্কেও বিস্তর ইতিহাস জানা যায়। সাঁওতালদের উপর শোষণ ও অত্যাচার , সাঁওতাল বিদ্রোহের শুরু ও পরিণতি , সেনা ও পুলিশের নৃশংস অত্যাচারের কথা হিন্দু প্যাট্রিয়ট থেকে জানা যায়।
৫. পত্রিকাটি সেই সময়ে প্রচলিত বিভিন্ন কুপ্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল। যেমন - বাল্য বিবাহ , বহুবিবাহ - ইত্যাদি।
৬. তৎকালীন অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানতেও পত্রিকাটি কার্যকর।
৭. চালের বদলে মদ আমদানির সরকারি নীতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল হিন্দু প্যাট্রিয়ট।
৮. নারীশিক্ষার প্রসার , বিধবা বিবাহের প্রচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে পত্রিকাটির সদর্থক ভূমিকা ছিল।
৯. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় নীলবিদ্রোহকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
১০. শাসকের প্রকৃত শাসনের ছবি জনসমক্ষে তুলে ধরে হিন্দু প্যাট্রিয়ট জাতীয়তাবোধের বিস্তার ঘটিয়েছিল।
0 comments